রাজনীতি: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই মাস যাবত তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। সেখানে থেকেই তিনি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিনল্যান্ডে আশ্রয়ের খোঁজ করছেন। গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু। এদিকে, হাসিনার দুবাইয়ে অবস্থান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বলা হচ্ছে, হাসিনা গত রোববার স্থানীয় সময় সকালে ভারত থেকে দুবাইতে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তিনি দুবাইয়ের বিলাসবহুল এলাকা জুমেরিয়া-টু-তে আছেন। তবে এ তথ্যের কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র পাওয়া যায় নি। কেউ কেউ এটাকে স্রেফ গুজব বলে অবিহিত করেছেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানে না। দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। একই সাথে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের কাছেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দু জানিয়েছে, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছেন। তবে সেখানে তার আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদিও হাসিনার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যের নাগরিক এবং তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক সেখানকার ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এবং জুনিয়র মন্ত্রী। উল্টো যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য চাপ দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা। হিন্দুর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইউরোপের মধ্যে হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য হতে পারে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলেনস্কি। সেখানে শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি থাকেন। ফিনল্যান্ডে হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন কি না, এমন প্রশ্ন করা হয় ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যালেজান্ডার স্টাবের দফতরে। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। তবে তার পাসপোর্টে আগে থেকেই মার্কিন ভিসা লাগানো ছিল। কিন্তু তিনি দেশ থেকে পালানোর পরই এটি বাতিল করে দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয় যেহেতু হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তাই তার এ ভিসাটি আর বৈধ থাকছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বসবাস করেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। যদি হাসিনা দেশটিতে যেতে পারতেন তাহলে তিনি হয়তো-বা সজীবের বাসায় উঠতেন।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা যদি বেশিদিন ভারতে থাকেন তাহলে এটি দেশটির জন্য বিব্রতকর হবে। কারণ, বাংলাদেশের নতুন সরকার শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে ফেরত চাইতে পারে। ঠিক এই কারণেই শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে ভারত আশ্রয় দেয়নি।
সূত্র : dailyinqilab