জাতীয়: দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচিতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে, ট্রাক, সিএনজি, রিকশা বা হাতে করে অসংখ্য মানুষ ত্রাণ নিয়ে আসছেন। ব্যাপকভাবে ত্রাণ দিতে আসার এসব দৃশ্য ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে।
হিসেব অনুযায়ী, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৭২ টাকা নগদ সংগ্রহ করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহনে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসছেন। অসংখ্য মানুষ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে এসেছেন।
বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সংগ্রহে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে বিরামহীনভাবে কাজ করতে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে ত্রাণের বহর খালি করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
দিনভর বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া ও গেমস রুম বিকেলেই পূর্ণ হয়ে যায়। পরবর্তীতে টিএসসির বারান্দায় ত্রাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা শুরু হয়।
এ নিয়ে জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ ফেসবুকে লিখেছেন,
এটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ছবি। টিএসসিতে ত্রাণ জমা দিতে যাওয়া মানুষের ভিড়! কতিপয় লুটেরা এই সোনার বাংলাদেশকে লুটপাট করে ধ্বংস করে দিচ্ছিল। সহস্র প্রাণের বিনিময়ে তরুণরা লুটেরাদের তাড়িয়ে ফিরিয়ে এনেছে সোনার বাংলাদেশ।
এই বাংলাদেশ আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ নিয়ে আমরা বিশ্বের বুকে গর্ব করি মাথা উঁচু করে।
রিফাত নাজমুল লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গণত্রাণ কর্মসূচিতে এত মানুষ এত ত্রাণ নিয়ে আসছেন যে ভলান্টিয়াররা হিমসিম খাচ্ছে এগুলোর হিসাব রাখতে। একদিনে জমা হয়েছে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা (রাত ৮টা পর্যন্ত)।
ওদিকে ত্রাণ নিয়ে আসা গাড়ির কারণে সৃষ্টি হয়েছে লম্বা জ্যামের। এমন জ্যামে বিরক্ত লাগে না, গর্ব হয় ভাই গর্ব।জাতীয় এই দুর্যোগ আমরা মোকাবেলা করবো হাতে হাত রেখে, সৃষ্টি করবো ঐক্যের এক অনন্য নজির। যত বিপদ তত ঐক্য।
শাখাওয়াত হোসেন নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমিও ২ বার গেছি। সকালে ২ ব্যাগ কাপড় নিয়ে। আর একটু আগে শুকনা খাবার নিয়ে। অস্বাভাবিক জ্যাম মানুষের। খুবই ভালো লাগলো দেখে।
বিজয় রায় লিখেছেন, এমন একটা দেশ সবাই আশা করেছিলাম যে একজনের বিপদে অন্য একজন নিজের মনে করে এগিয়ে আসবে। এই দেশ বাংলাদেশ। ধন্যবাদ সবাই কে।
আব্দুল আলী সুমন রেখেছেন, টিএসসিতে আজকে যে পরিমাণ মানুষের ঢল। আমি স্বচক্ষে দেখলাম মানুষের ভালোবাসা মানুষের প্রতি বাংলাদেশের প্রতি সেটা আসলে আমাকে অশ্রুসিক্ত করে ফেলেছে।