আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক লাইমলাইটে চলে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত দলটি। আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদে যদি ক্ষমতাসীন দল হয় বিএনপি, তবে বিরোধী দল হবে কারা?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে বিবিসি বাংলা। গণমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এখন আওয়ামী লীগের অবস্থা বিপর্যস্ত। দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ হবে কি-না সে আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। মনে করা হচ্ছে, রাজনীতির মাঠে সহসাই শক্তভাবে ফিরে আসতে পারবে না আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের এমন অবস্থায় এককভাবে সরকারে আসতে পারে বিএনপি। দলটি ক্ষমতায় এলে বিরোধী দল কারা হবে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে জোট গড়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে কি ইসলামি দলগুলোই বিরোধী জোট হবে?
এ বিষয়ে জামায়াতের মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, আমরা কখনও বিরোধী দলে বসবো এই চিন্তা করি না বরং আমরা মনে করি, জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে পার্লামেন্টে এমন সংখ্যক আসন দেবেন, যে আসনের মাধ্যমে আমরা সরকার গঠনের পর্যায়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।
ইসলামি দলগুলোর মধ্যে আকিদাগত নানা বিরোধ থাকলেও জোট গড়ার বিষয়ে প্রায় সবাই একমত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, চিন্তাগত বা মতাদর্শগত মতভিন্নতাগুলো আমরা এই মুহুর্তে রাজনীতির মঞ্চে উপস্থিত করতে চাচ্ছি না।
রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ একমত প্রকাশ করেন এই নেতা। নানা সময়ে জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলটির সঙ্গে ঐক্য গড়ায় দ্বিমত নেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের। তিনি বলেন, ঐক্যের যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে আমরা আগ্রহী। আমরাই আগে থেকেই এ ব্যাপারে বলে এসেছি।
ইসলামী দলগুলো জোট করে তেমন সফলতা পাবে না বলেও মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। তাই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিলে তারাই বিরোধী দল হয়ে ওঠে কি-না। এমন প্রশ্নও উঠে আসছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আব্দুল লতিফ মাসুদ মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষ ধার্মিক কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। ভোটের মাঠে জনগণ নৌকা অথবা ধানের শীষেই ভোট দেন।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামের ভোট হতে পারে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ। কিন্তু বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করার মতো নয়। বাংলাদেশের মানুষ মোল্লাতন্ত্রেও বিশ্বাস করে না, নাস্তিকতন্ত্রেও বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশে এর আগে একবার মাত্র ইসলামি দলগুলোর বৃহৎ ঐক্যের নজির আছে। সেটাও প্রায় ৪৬ বছর আগে ১৯৭৮ সালে। সেসময় জামায়াতসহ চারটি ইসলামি দল মিলে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) গঠন করেছিল। জোটটি সংসদ নির্বাচনে ২০টি আসন পেয়েছিল। পরে অবশ্য সেই ঐক্য আর থাকেনি।
সুূুত্রঃ যুগান্তর