আর মাস তিনেক বাকি, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের দিন গুণছে পাকিস্তান। কিন্তু ২০২৩ এশিয়া কাপের মতো এবারও একটা প্রশ্নেই বারবার আটকে যাচ্ছে পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) – ভারত কি তাদের দল পাঠাবে পাকিস্তানে? ভারত না যাওয়ার কথা সরাসরি অনেকবার বললেও সেটা লিখিতভাবে কখনো জানায়নি। সে কারণে এবার ভারতকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে, তারা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে দল পাঠাবে কি না, সে প্রশ্নের উত্তর সরাসরি লিখিতভাবে জানাতে হবে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তান লিখেছে, পিসিবির প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালমান নাসির গত কয়েকদিনে দুবাইয়ে আইসিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকেই ভারতকে লিখিতভাবে তাদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ উত্তর জানানোর তাগিদ দেওয়ার কথা এসেছে।
আইসিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই আলোচনায় পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিও এর আগে অংশ নিয়েছিলেন। মূলত টুর্নামেন্টের সূচি নির্ধারণই এই আলোচনার উদ্দেশ্য। কিন্তু সূচি নির্ধারণ বারেবারে ভারতের প্রসঙ্গেই আটকে যাচ্ছে। পিসিবির পক্ষ থেকে ভারতের ম্যাচগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ের নিরাপত্তাসহ লাহোরে আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। এমনকি চাইলে ভারতীয় দল যাতে ম্যাচের দিন লাহোরে গিয়ে খেলে আবার সেদিনই ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থাও করা যাবে বলে জানিয়েছে পিসিবি।
কিন্তু ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানে দল পাঠানোর প্রসঙ্গটি দেশের সরকারের ওপর ছেড়ে রাখছে, আবার ‘নাম প্রকাশে’ অনিচ্ছুক অনেক বিসিসিআই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ভারতের সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, পাকিস্তানে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করে রেখেছে বিসিসিআই। এবারও ভারতের দিক থেকে লিখিত কোনো উত্তর না আসার সম্ভাবনাই বেশি বলে সূত্রকে উদ্ধৃত করে লিখেছে ক্রিকেট পাকিস্তান।
এদিকে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। সাধারণত কোনো বড় টুর্নামেন্টের সূচি আইসিসি তিন মাস আগেই চূড়ান্ত করে রাখে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচিও আগামী ১০ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে আভাস দিয়েছে ক্রিকেট পাকিস্তান। সে সূচিতে ভারতের ম্যাচগুলো লাহোরেই ধরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটবিষয়ক সংবাদমাধ্যমটি।
কিন্তু লাহোরেই ভারতের ম্যাচ রেখে সূচি চূড়ান্ত করার পর ভারত যদি পাকিস্তানে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে? সে ক্ষেত্রে আইসিসিকে ভিন্ন পরিকল্পনায় যেতে হবে। সে পরিকল্পনা কী হবে, তা এখনো জানানো হয়নি বলে লিখেছে ক্রিকেট পাকিস্তান।
এর আগে অবশ্য ভারত দল না পাঠালে ২০২৩ এশিয়া কাপের মতো করে ‘হাইব্রিড মডেলে’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের আলোচনাও এসেছে। ২০২৩ এশিয়া কাপেরও আয়োজক ছিল পাকিস্তান, কিন্তু ভারত সেখানে দল না পাঠানোয় কাগজে-কলমে আয়োজক পাকিস্তান থাকলেও অনেক ম্যাচের আয়োজন হয়েছে শ্রীলঙ্কাতে। এমনই অবস্থা হয়েছিল যে, ১৩ ম্যাচের এশিয়া কাপে পাকিস্তানে হয়েছে মাত্র ৪ ম্যাচ, সেমিফাইনাল-ফাইনালসহ বাকি ৯ ম্যাচই শ্রীলঙ্কায়। এবারও হাইব্রিড মডেলে ঘুরেফিরে ভারতের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কা বা দুবাইয়ে আয়োজনের ব্যাপারে এর আগে আলোচনা হয়েছিল।