প্রচ্ছদ খেলাধুলা বিপিএলে প্লে-অফ খেলতে কোন দলের সামনে কী সমীকরণ

বিপিএলে প্লে-অফ খেলতে কোন দলের সামনে কী সমীকরণ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশতম আসর চলছে। ৪৬ ম্যাচের টুর্নামেন্টটির মধ্যে ৪২ ম্যাচই প্রথম পর্বের। যেখানে ইতোমধ্যে ৩২টি ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। দুই তৃতীয়াংশ ম্যাচ শেষে প্লে-অফের সমীকরণ মেলানো শুরু করে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। পিছিয়ে নেই দর্শকরা। তারাও মেলাচ্ছে নানা সমীকরণ।

এরই মধ্যে বিপিএল আবার ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম হয়ে আবার ঢাকায় ফিরেছে। ঢাকায় প্রথম পর্বে আট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। বাকি সিলেট ও চট্টগ্রামে হয় ১২টি করে ম্যাচ। টুর্নামেন্টের বাকিসবগুলো ম্যাচই বসবে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে। অধিকাংশ দলই নিজেদের ১২ ম্যাচের মধ্যে নয়টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। আর এতে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। প্লে-অফের বাকি তিন দলের প্রতিযোগিতায় রয়েছে ফরচুন বরিশাল, চিটাগং কিংস ও খুলনা টাইগার্স। অন্য তিন দলও কাগজে–কলমে টিকে আছে।

চলুন দেখে নেই কোন দলের সামনে কী সমীকরণ :

রংপুর রাইডার্স : চলমান বিপিএলে এখন পর্যন্ত নয় ম্যাচ খেলে আটটিতেই জিতেছে তারা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দলটি ইতোমধ্যে প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত করেছে। হাতে আছে আরও তিন ম্যাচ। রংপুর সববেশ ম্যাচটি হারলেও তাদের লক্ষ্য শীর্ষ দুইয়ে থেকে কোয়ালিফায়ারে খেলা। আর একটি ম্যাচ জিতলেই লক্ষ্য পূরণ হবে। শুধু তা–ই নয়, বিপিএল ইতিহাসে এককভাবে সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে প্লে–অফে খেলার সুযোগও আছে রংপুরের সামনে। সে ক্ষেত্রে জিততে হবে আরও দুটি ম্যাচ। দলটির বাকি তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ রাজশাহী, চিটাগং ও খুলনা।

ফরচুন বরিশাল : বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশাল রয়েছে টেবিলের তৃতীয় স্থানে। প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে জোরেশোরেই ছুটছে তারা। লিগ পর্বে সবচেয়ে বেশি চার ম্যাচ বাকি থাকায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে বরিশাল। আর একটি ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত হবে। দুটিতে জিতলে তো কথাই নেই। কোনো হিসাব–নিকাশ ছাড়াই কোয়ালিফায়ারে খেলবে। লিগ পর্বে দলটির বাকি চার ম্যাচ সিলেট, খুলনা, ঢাকা ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে।

আরও পড়ুন : বিসিবি থেকে এলো হতাশার সংবাদ

চিটাগং কিংস : বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে রংয়েছে চিটাগং কিংস। প্লে–অফে খেলতে হলে দলটিকে জিততে হবে আরও দুই ম্যাচ। একটি ম্যাচ জিতলেও এলিমিনেটরে জায়গা করে নেওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নেট রান রেট বিবেচনায় আসবে। নেট রান রেট ধনাত্মক হওয়ায় (+১.০৪৫) সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে বন্দর নগরীর দলটি। লিগ পর্বে তাদের বাকি তিন ম্যাচ শীর্ষ দুই দল রংপুর, বরিশাল এবং তলানিতে থাকা দল সিলেটের বিপক্ষে।

Advertisement
খুলনা টাইগার্স : জয় পরাজয় সমান তালে চলছে খুলনা টাইগার্সের। অন্য দলগুলোর ওপর নির্ভর না করে প্লে–অফে খেলতে হলে দলটিকে লিগ পর্বে শেষ তিন ম্যাচেই জিততে হবে। দুটিতে জিতলেও সম্ভব, সে ক্ষেত্রে যেকোনো একটি ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর হার কামনা করতে হবে। তবে খুলনার কাজটা খুব একটা সহজ হওয়ার কথা নয়। কারণ, শেষ তিন ম্যাচের দুটিই শীর্ষ দুই দল রংপুর ও বরিশালের বিপক্ষে। শেষটিতে প্রতিপক্ষ ধুঁকতে থাকা ঢাকা ক্যাপিটালস।

দুর্বার রাজশাহী : প্রায় পাঁচ বছর পর রাজশাহীর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি বিপিএলে ফিরেছে। কিন্তু দুর্বার রাজশাহী নামের দলটি খুব একটা ভালো করতে পারছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘দুর্বল’ রাজশাহী নামে ট্রলের শিকার হতে থাকা দলটি ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে পাঁচে। লিগ পর্বে ম্যাচ বাকি মাত্র দুটি-এর একটি শীর্ষে থাকা রংপুরের বিপক্ষে, অন্যটিতে প্রতিপক্ষ তলানিতে থাকা সিলেট। নেট রান রেটও সুবিধার নয় (-১.৪০০)। তাই শেষ চারে জায়গা করে নিতে হলে রাজশাহীকে শেষ দুই ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিততে তো হবেই, সঙ্গে খুলনাকেও একাধিক ম্যাচে হারতে হবে।

ঢাকা ক্যাপিটালস : সবচেয়ে বেশি ঢাকঢোল পিটিয়ে বিপিএলে আগমনী বার্তা দিয়েছিল ঢাকা ক্যাপিটালস। কিন্তু ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের দলের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ছয় ম্যাচের সব কটিতে হেরে প্লে–অফের দৌড় থেকে অনেকটা ছিটকে পড়ে রাজধানীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সর্বশেষ চার ম্যাচের তিনটিতে জিতলেও তাদের প্লে–অফে খেলা অনেক যদি–কিন্তু ওপর নির্ভর করছে। লিগ পর্বে দলটির শেষ দুই ম্যাচ বরিশাল ও খুলনার বিপক্ষে। ম্যাচ দুটিতে শুধু বিশাল ব্যবধানে জিতলেই চলবে না, খুলনা ও রাজশাহীর পয়েন্ট যেন ১০–এর বেশি না হয়, সেই কামনাও করতে হবে।

সিলেট স্ট্রাইকার্স : প্লে-অফ পর্বে খেলতে হলে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে অলৌকিক কিছুর অপেক্ষা করতে হবে। কাগজে–কলমে টিকে থাকা সিলেটেরও শেষ চারে ওঠার সমীকরণ নিজেদের হাতে নেই। চায়ের শহরের দলটির ম্যাচ বাকি তিনটি—বরিশাল, রাজশাহী ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে। তিন ম্যাচই জিততে হবে বিশাল ব্যবধানে। তাতে তাদের পয়েন্ট বেড়ে হবে ১০। এরপর ১০ পয়েন্ট পাওয়া অন্য দলগুলোর সঙ্গে আসবে নেট রান রেটের হিসাব–নিকাশ। চারটি দলের পয়েন্ট ১০–এর বেশি হওয়া মানেই সিলেটের বিদায় নিশ্চিত।